ইসলামের দৃষ্টিতে কাশ্মীর হামলা ন্যায়বিচার নাকি সন্ত্রাসবাদ বিস্তারিত আলোচনা

|
কাশ্মীর হামলা

এবং ” জিহাদ “ শব্দটিকে তারা হিংসার সঙ্গে যুক্ত করেন। কুরআন-হাদিসের সরাসরি দলিল,ঐ তিহাসিক প্রমাণ ও ইসলামি স্কলারদের ব্যাখ্যার মাধ্যমে জানাবে ইসলাম কী সত্যিই সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে?

সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা:

নিরপরাধ মানুষকে হত্যা, জনগণকে আতঙ্কিত করা ও রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সহিংসতা।

ইসলামের সংজ্ঞা:

ইসলাম শব্দের অর্থই হলো “শান্তি” (আরবি: সালাম)। কুরআনে বলা হয়েছে তোমরা পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করো” (সূরা আল-বাকারা, ২: ২০৮)

স্পষ্ট বার্তা:

ইসলামে কোনো নিষ্পাপ মানুষকে হত্যা করাকে সবচেয়ে বড় পাপ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে কুরআনে বলা হয়েছে । যে কেউ একজন মানুষকে হত্যা করল, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করল” (সূরা আল-মায়িদা, ৫:৩২)।

জিহাদ: ভুল ব্যাখ্যা vs সঠিক অর্থ:

সঠিক অর্থ:

“জিহাদ” অর্থ সংগ্রাম” বা “প্রচেষ্টা”। এটি প্রধানত দুটি প্রকার আত্মার জিহাদ (বড় জিহাদ) নিজের কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে লড়াই (হাদিস: তিরমিজি ১৬৭১)। শারীরিক জিহাদ (ছোট জিহাদ)

শুধুমাত্র আত্মরক্ষা বা নির্যাতিতদের সাহায্যের জন্য যুদ্ধ, যা ইসলামে অত্যন্ত কঠোর নিয়মের অধীন। জিহাদের নিয়ম

(কুরআন ও হাদিসের আলোকে) নিরপরাধ নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও ধর্মীয় ব্যক্তিদের হত্যা নিষিদ্ধ (হাদিস: বুখারি ৩০১৪)।

ফসল, গাছপালা ও পরিবেশ ধ্বংস নিষেধ (আবু দাউদ ২৬০৭)। শত্রুকে শান্তির প্রস্তাব দিতে হবে আগে (কুরআন ৮:৬১)। নবী মুহাম্মদ (সা.) মক্কা বিজয়ের সময় ক্ষমা করেছিলেন, কোনো প্রতিশোধ নেননি।

ISIS, আল-কায়েদার মতো গোষ্ঠীগুলো কুরআনের আয়াতকে বিকৃতভাবে ব্যাখ্যা করে। কুরআন ৯:৫ (মুশরিকরা হত্যা করো)

ই আয়াতটি নির্দিষ্ট ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে অবতীর্ণ হয়েছিল, যখন মক্কার মুশরিকরা মুসলমানদের উপর চরম অত্যাচার চালিয়েছিল।

এটি কোনো সর্বজনীন নির্দেশ নয়, বরং একটি বিশেষ যুদ্ধের নির্দেশ যা আজ প্রযোজ্য নয়।

ইসলামি স্কলারদের ফতোয়া:

সন্ত্রাসবাদ ইসলামের নামে হওয়া অপরাধ,যা কুরআন সুন্নাহর পরিপন্থী”আত্মঘাতী হামলা হারাম জাহান্নামের কারণ”।

ইসলামি ইতিহাসে সন্ত্রাসবাদের অনুপস্থিতি

ইসলামের ১৪০০ বছরের ইতিহাসে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন ছিল না বরং মুসলিম শাসকরা অমুসলিমদের অধিকার রক্ষা করেছেন।

খলিফা উমর (রা.)

জেরুজালেমে খ্রিস্টানদের নিরাপত্তা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। ইহুদি ও খ্রিস্টানরা শতাব্দী ধরে শান্তিতে বসবাস করেছে।

ইসলাম শত্রুকেও ন্যায়বিচার দিতে বলে। কুরআনে বলা হয়েছে: “অন্যায়কারীর প্রতি যেন তোমার বিদ্বেষ তোমাকে ন্যায়বিচার থেকে দূরে না নেয়” (সূরা আল-মায়িদা, ৫:৮)। ইসলামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর

হত্যাকারীর শাস্তি মৃত্যু (কুরআন ২:১৭৮)

দুনিয়া ও আখিরাতের শাস্তি: কুরআনে বলা হয়েছে,যে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মানুষ হত্যা করল, তার শাস্তি জাহান্নাম”(সূরা আন-নিসা, ৪:৯৩)।

কুরআনের নির্দেশ:

ধর্মের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই” (সূরা আল-বাকারা, ২:২৫৬)

ইসলাম শান্তির ধর্ম, সন্ত্রাস নয়

ইসলাম সন্ত্রাসকে “ফিতনা”(অরাজকতা) বলে চিহ্নিত করে, যা ধ্বংসের সমার্থক।

কুরআন-হাদিসের প্রতিটি শব্দ শান্তি, ন্যায় ও মানবতার কথা বলে। সন্ত্রাসীরা ইসলামের শত্রু কারণ তারা নিরপরাধ মানুষের জীবন নষ্ট করে এবং ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে কলঙ্কিত করে।

আমাদের আহ্বান:

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। ইসলাম সম্পর্কে সরাসরি কুরআন-হাদিস ও বিশ্বস্ত স্কলারদের থেকে জ্ঞান নেওয়া।

Leave a Comment